দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার কারণ ও প্রতিকার

দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার কারণ ও প্রতিকার


ডা. শাকিল আহমেদ:দাঁত ব্রাশ করার সময় দেখলেন লাল রক্তে আপনার ব্রাশ লাল হয়ে গিয়েছে বা কুলি করতে গিয়ে দেখলেন, বেসিনে লাল রক্ত। এমন ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তিত হয়ে যাবেন। কিছু সাধারন নিয়ম মেনে চললে এই অপ্রত্যাশিত রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।
দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণের বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কারণটা হলো মাড়ির প্রদাহ। কিন্তু আরও কয়েকটি কারণে এ রকম হতে পারে, যার কয়েকটি বেশ জটিল এবং গুরুতর। মাড়ির প্রদাহ (জিনজিভাইটিস/ Gingivitis) কেন হয়? দাঁতের গোঁড়ায় প্ল্যাক বা দন্তমল জমা হওয়ার কারনেই প্রধানত মাড়ির প্রদাহ হয়ে থাকে। মেডিকেল টার্মে যাকে বলা হয় জিনজিভাইটিস। ঠিকমত ব্রাশিং না হলে দাঁত এর গোঁড়া থেকে প্ল্যাক বা দন্তমল পরিষ্কার হয় না। এই প্ল্যাক বা দন্তমল ধীরে ধীরে মাড়িকে আক্রান্ত করে মাড়ির প্রদাহ বা জিনজিভাইটিস সৃষ্টি করে।
মাড়ির প্রদাহ ছাড়াও আরও কিছু কারনে মাড়ি থেকে রক্ত পড়তে পারে, সেগুলো হলঃ ১. খুব শক্ত শলাকার (Hard Bristle) ব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা। ২. ভিটামিন সি এর অভাব। ৩. রক্তের বিভিন্ন রোগ।  ৪. কৃত্রিম দাঁত ঠিক ভাবে জায়গায় না বসা। ৫. ডেঙ্গু জ্বর। ৬. অ্যাস্পিরিন জাতীয় ওষুধ সেবন করা। ৭. লিভার এর বিভিন্ন সমস্যা ইত্যাদি।
মাড়ির প্রদাহ (জিনজিভাইটিস/Gingivitis) হলে কি করবেন?
 ১. সঠিক নিয়মে ব্রাশ করার অভ্যাস গড়ে তোলা। সকালে নাস্তার পরে এবং রাতে ঘুমানোর আগে ২ বার ব্রাশ করা।
 ২. প্রতি বার খাবারের পর ভাল করে কুলি করা। 
৩. পেয়ারা, আমলকী, জাম্বুরা, কমলা, কামরাঙা ইত্যাদি ফল, রঙ্গিন শাকসবজি এবং সালাদ খেতে হবে। 
৪. নরম শলাকা (Soft Bristle) এর টুথব্রাশ ব্যবহার করা।
 ৫. ডেন্টাল ফ্লস বা দাঁত পরিষ্কার করার সুতা ব্যবহার করতে হবে, যেন দাঁতের ফাঁকে খাবার আটকে না থাকে। 
৬. তামাক, জর্দা খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
 ৭। একজন দক্ষ এবং BMDC এর থেকে রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রাপ্ত দন্ত চিকিৎসক এর কাছ থেকে স্কেলিং (scaling) করানো বা দন্তমল পরিষ্কার করে নেয়া। পরবর্তীতে প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর দন্ত চিকিৎসক এর কাছ থেকে মুখের ভিতরের এবং দাঁত এর অবস্থা পরীক্ষা করানো।
 ৮. রক্তক্ষরণ বেশি হলে এক টুকরো তুলা বরফ ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে, ওই জায়গায় কিছুক্ষণ চেপে ধরে রাখুন। 
৯. মাড়ি থেকে অতিরিক্ত (মুখভর্তি রক্ত পড়া) এবং ঘনঘন রক্তক্ষরণ হলে অতি দ্রুত চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.