বাতজ্বর সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন!
বাতজ্বর সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন!
বাতজ্বর কনটেন্টটিতে বাতজ্বর কী, এর লক্ষণ, উপসর্গ, পরীক্ষা নিরীক্ষা, চিকিৎসা, বিশ্রাম ও বাড়তি সতর্কতা, প্রতিরোধ, এই সব বিষয়গুলো সর্ম্পকে বর্ণনা করা হয়েছে।
বাতজ্বর
বাতজ্বর সাধারণত ৫-১০ বছরের শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। তবে অল্পবয়স্ক শিশু এবং বড়দেরও বাতজ্বর হতে পারে। সাধারণত ২৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের মধ্যে এই রোগ বারবার হতে দেখা যায়।বাতজ্বর কি
সাধারণত গলায় ব্যথা হলে (টনসিলের সমস্যা) তা যদি যথাযথ ও সম্পূর্ণরূপে চিকিৎসা না করা হয় তাহলে এর থেকে বাতজ্বর দেখা দেয়। বাতজ্বর একটি সংক্রামক রোগ। বাতজ্বরের শুরুটা সাধারণত জীবাণুর মাধ্যমে গলায় সংক্রমণের ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে হয়ে থাকে।
বাতজ্বর হয়েছে কি করে বুঝবেন
বাতজ্বরের উপসর্গ গুলো সাধারণত ভিন্ন হয়ে থাকে। কারো কারো ক্ষেত্রে অনেক ধরনের আবার কারো ক্ষেত্রে রোগের অল্পকিছু উপসর্গ দেখা দেয়। রোগ চলাকালীন সময়ে উপসর্গের পরিবর্তন ও হতে পারে।
বাতজ্বর হলো সাধারণত: যেসব লক্ষণ ও উপসর্গগুলো দেখা দেয়:
- জ্বর
- অস্থিসন্ধিতে মৃদু বা তীব্র ব্যথা যা প্রায়ই পায়ের গোড়ালী, হাঁটু, কনুই অথবা হাতের কবজি এবং কখনো কখনো কাঁধ, কোমড়, হাত, পায়ের পাতায় হয়ে থাকে
- ব্যথা এক অস্থিসন্ধি থেকে আরেক অস্থিসন্ধিতে ছড়িয়ে পড়ে
- লাল, উষ্ণ অথবা ফোলা অস্থিসন্ধি
- চামড়ার নিচে ক্ষুদ্র ব্যথাহীণ পিন্ড
- বুকে ব্যথা
- বুক ধড়ফড় করা
- অল্পতে ক্লান্ত বা দুবর্ল বোধ করা
- শ্বাসকষ্ট
- চ্যাপ্টা অথবা সামান্য ফোলা ব্যথাহীণ এবড়োথেবড়ো কিনারা বিশিষ্ট লালচে দানা
কখন ডাক্তার দেখাবেন
শিশুর গলায় ব্যথা হলে বা টনসিলের সমস্যা হলে এর লক্ষণ এবং উপসর্গ দেখা দেয়ার সাথে সাথে শিশুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। উপযুক্ত চিকিৎসা বাতজ্বর অনেকখানি প্রতিরোধ করে। রোগের যেসব লক্ষণ এবং উপসর্গ দেখা দেয়া মাত্র শিশুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে সেগুলো হলো-
- ঠান্ডার উপসর্গ ছাড়াই নাক দিয়ে পানি পড়া।
- গলায় ব্যথার সাথে গলায় ফোলা ভাব থাকা।
- কোন কিছু খেতে সমস্যা হওয়া।
- নাক দিয়ে রক্ত পড়া যা বিশেষ করে ৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে দেখা যায়।
- এছাড়া উপরের লক্ষণ সমূহ ছাড়াও গিরা বা অস্থিসন্ধিতে ব্যথা থাকলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
- কোথায় চিকিৎসা করাবেন
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
- জেলা সদর হাসপাতাল
- মেডিকেল কলেজ হাসপতাল
- জাতীয় বাতজ্বর ইনস্টিটিউট
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
- বেসরকারী হাসপাতাল
কি ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে- শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা।
- রক্তের পরীক্ষা।
- ইসিজি পরীক্ষা।
- ইকোকার্ডিওগ্রাফী।
কি ধরনের চিকিৎসা আছে- এ্যান্টিবায়োটিক সেবন।
- জ্বর এবং ব্যথা কমানোর জন্য ব্যথার ঔষধ খাওয়া।
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবনের পাশাপাশি নিয়মিত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
বিশ্রাম ও বাড়তি সতর্কতা- ব্যথা এবং রোগের অন্যান্য উপসর্গ ভালো না হওয়া পর্যন্ত রোগীকে প্রয়োজনে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস পর্যন্ত পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে।
- রোগীকে অন্যান্য কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
বাতজ্বর কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়প্রথম থেকেই গলায় সংক্রমণের সঠিক চিকিৎসা করলে বাতজ্বর হওয়ার সম্ভাবনা কম হয় বা একেবারেই থাকে না।সচরাচর জিজ্ঞাসাপ্রশ্ন.১. বাতজ্বর কেন হয়?উত্তর. বিশেষ এক ধরনের জীবানু (স্টেপটোককাস পায়োজিনস) দ্বারা গলার সংক্রমণের মাধ্যমে বাতজ্বর হয়ে থাকে।প্রশ্ন.২. কাদের বাতজ্বর হওয়ার ঝুঁকি বেশি রয়েছে?উত্তর. যাদের বাতজ্বর হওয়ার সম্ভাবনা বেশী রয়েছে তারা হলেন-- পরিবারে অন্য কারো বাতজ্বর থাকলে
- আক্রান্ত জীবাণুর ধরন-কিছু কিছু জীবাণু অন্যান্য জীবাণুর চাইতে বাতজ্বর হওয়ার ক্ষেত্রে বেশি ভূমিকা রাখে।
- পরিবেশগত বিষয় যেমন-ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা,সুষ্ঠ পয়োনিষ্কাশন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং অন্যান্য বিষয় এই রোগের জীবাণু বিস্তারে সহায়তা করে।
প্রশ্ন.৩. বাতজ্বর হলে কি ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে?উত্তর. বাতজ্বরের ফলে কখনো কখনো দীর্ঘস্থায়ী জটিলতা দেখা দিতে পারে যেমন:- বাতজ্বরের ফলে বাত জনিত হৃদরোগ হয় যা থেকে হৃদপিন্ডের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।
- হৃদপিন্ডের বামদিকের দুইটি কুঠরীর মধ্যের ভালবে বেশি সমস্যা দেখা দেয়। তবে অন্যান্য ভালবও আক্রান্ত হতে পারে।
-জাতীয় ই-তথ্যকোষ
No comments