মানসিক চাপের ফলে দৈহিক রোগ
মানসিক চাপের ফলে দৈহিক রোগ
মানসিক চাপের ফলে দৈহিক বিকার বা রোগসমূহ :
দেহযন্ত্রের মূল পরিচালন কেন্দ্র ব্রেন বা মস্তিষ্ক এবং দেহের প্রত্যেক কাজে এই ব্রেন নির্দেশ পাঠায়। সে জন্য ব্রেনের উপর যে কোন চাপ দেহযন্ত্রের কাজের উপর অনেক বেশি চাপ সৃষ্টি করে। মানসিক চাপ ব্রেনের উপর ভীষণ ধরনের প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে, এমনকি অতিরিক্ত চাপের ফলে রক্তপাত, পক্ষাঘাত এবং হৃৎপিন্ডের আকস্মিক অচলাবস্থা বা স্ট্রোকও হতে পারে। বর্তমান জগতের বহু রোগ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানসিক চাপের সঙ্গে যুক্ত। এই রোগগুলোকে সাইকোসোমেটিক ডিজিজ বা মানসিক বিকারজাত শারীরিক ব্যাধি বলা হয়। এই শব্দটি গ্রীক শব্দমালা থেকে গ্রহণ করা হয়েছে- সাইকি কথার অর্থ অন্তঃস্থ তেজ বা আত্মা বা মন; সোমা কথার অর্থ দেহ। অর্থাৎ মনের বিকারের ফলে দৈহিক অসুস্থতা। সাইকোসোমাটিক অসুখগুলো কিছু সাধারণ সমস্যার সৃষ্টি করে। যেমন- রোগ সংক্রমণ আকস্মিক দুর্ঘটনা ও ক্ষত, পুষ্টিহীনতা ইত্যাদি এগুলোর একাধিক বার হওয়া এবং বিপজ্জনকভাবে হওয়া।
হৃদরোগ গভীরভাবে মানসিক চাপের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এবং আরও কতিপয় রোগ আছে, যেগুলো মানসিক চাপজাত হৃদরোগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত যেমন-
১। ধমনীগত হৃদরোগ,
২। পেপটিক আলসার,
৩। উচ্চ রক্তচাপ,
৪। ব্রঙ্কিয়াল এ্যাজমা,
৫। ডায়াবেটিজ,
৬। হতাশায় ভেঙ্গে পড়া,
৭। নিদ্রাল্পতা,
৮। উত্তেজনা প্রসূত মাথা ধরা,
৯। গেটে বাত,
১০। বৃহদযন্ত্রের ঘা জনিত প্রদাহ,
১১। রতিক্রিয়ায় অক্ষমতা,
১২। মহিলাদের মানসিক সমস্যা,
১৩। মেরুদন্ডের রোগ বিশেষ,
১৪। মাইগ্রেন,
১৫। পিঠ ও ঘাড়ের ব্যথা,
১৬। কোষ্ঠকাঠিন্য।
সাইকোসোমাটিক অসুস্থতা অর্থাৎ মানসিক রোগের বহিঃপ্রকাশ শারীরিক অসুস্থতার মাধ্যমে অনেকে মনে করেন এটা একটা কাল্পনিক ব্যাপার। অর্থাৎ এক ব্যক্তি এক সময়ে অসুস্থতা রোধ করে কিন্তু তার দেহে কোন রোগ নেই। কিন্তু সাইকোসোমাটিক অসুস্থতা একটা বাস্তব রোগ- যেমন এ্যাপেন্ডিসাইটিস অথবা রোগাক্রান্ত ফুসফুস। এই অসুখে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে- এই রোগটির উৎপত্তি ও বৃদ্ধির জন্য মানসিক, সামাজিক ও পরিবেশগত উপাদানগুলো যথেষ্ট সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে। এমনকি এই রোগে একজন কঠোর মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তি এবং একজন দুর্বল মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তি একই অবস্থার সম্মুখীন হয়।
No comments