গর্ভাবস্থা/প্রেগন্যান্সি নিয়ে প্রচলিত ৭ মিথ্যা

গর্ভাবস্থা/প্রেগন্যান্সি নিয়ে প্রচলিত ৭ মিত্থা।


প্রেগন্যান্সি! ব্যাপারটা নিয়ে যতটা সচেতনতা রয়েছে তার থেকে অনেক বেশি রয়েছে ভ্রান্ত ধারনা। গর্ভাবস্থায় মায়ের মুখ দেখে, শারীরিক গঠন দেখে শিশুর লিঙ্গ অনুমান, কী খেলে কী হয় তা নিয়ে বহু দিন ধরেই প্রচলিত রয়েছে বহু মিথ। জেনে নিন এমন কিছু মিথ যার আসলে কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
১। দু’জনের খাবার খেতে হবে- গর্ভাবস্থায় বলা হয় মাকে নিজের এবং শিশুর দু’জনের খিদে মেটাতে হবে। নিজের খাবারের সঙ্গে ৩০০ ক্যালরি বেশি খাবার খাওয়া প্রয়োজন। বৈজ্ঞানিক ভাবে এই ধারণার কোনও ভিত্তি নেই। বরং ওজন বেশি বেড়ে গেল জটিলতা বাড়তে পারে। তাই ভিটামিন, প্রোটিনের পরিমাণের উপর খেয়াল রাখুন, খাবারের পরিমাণে নয়।
২। মাঝে মাঝে ওয়াইন খাওয়া চলতে পারে- অনেকেই মনে করে মাঝে মাঝে ওয়াইন অ্যালকোহল খেলে শিশুর বিশেষ ক্ষতি হবে না। তবে চিকিত্সকরা কিন্তু বলেন, এতে শিশু এসআইডিএস বা এডিএইচিডিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
৩। প্রথম তিন মাস গোপন রাখুন- গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস খবর চেপে রাখতে বলেন বাড়ির বড়রা। যদিও, এর কোনও কারণ নেই। মনোবিদরা জানাচ্ছেন, নিজের খুশির খবর অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিলেই বরম হবু মায়ের মন ভাল থাকে। যা শিশুর সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
৪। কিছু খাবার খেলে গর্ভপাত হতে পারে- বাড়ির বড়রা বলেন পেঁপে, আনারস, ডিম খেলে গর্ভপাত হতে পারে। যদিও চিকিত্সকরাও মনে করেন কাঁচা পেঁপে খেলে জরায়ু সঙ্কুচিত হয়ে গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে। তবে ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন যা মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই চিকিত্সকের পরামর্শ নিয়ে ডিম খেতে পারেন। কাঁচা আপেলও কিছু ক্ষতি করতে পারে বলে মনে করা হয়।
৫। শিশুর রং ফর্সা হবে- প্রচলিত আছে কেশর, কমলালেবুর মতো কিছু খাবার খেলে শিশুর গায়ের রং ফর্সা হবে। অনেকেই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কেশর দেওয়া দুধ পান করেন। তবে তার সঙ্গে শিশুর গায়ের রঙের কোনও সম্পর্ক নেই। শিশুর গায়ের রং কেমন হবে তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে জেনেটিক ফ্যাক্টরের উপর।
৬। গর্ভবস্থায় সেক্স নয়- গর্ভবতী মহিলাকে অনেকেই সেক্স থেকে দূরে থাকতে বলেন। মনে করা হয় সেক্সের ফলে গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে বা সময়ের আগেই শুরু হয়ে যেতে পারে গর্ভযন্ত্রণা। চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, যতক্ষণ না কোনও রকম অসুবিধা হচ্ছে বা পেটে চাপ পড়ছে ততক্ষণ সেক্সে কোনও অসুবিধা নেই। শিশু অ্যামনিওটিক ব্যাগের মধ্যে সুরক্ষিত থাকে। তাই গর্ভবস্থায় সেক্সে শিশুর বিশেষ ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
৭। ঘি বা মাখন- প্রেগন্যান্ট মহিলাদের অনেকেই গর্ভাবস্থার শেষ দিকে ঘি বা মাখন খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। মনে করা হয় এর ফলে ডেলিভারি সহজ হবে। নরম্যাল ডেলিভারির সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। মায়ের পেলভিস, সন্তানের সাইজ অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে ডেলিভারি।

No comments

Powered by Blogger.